মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭

নব বর্ষ

ঈসায়ী নব বর্ষ
--------------- শামসুল আবেদীন
আর কটা দিন পর আসছে ঈসায়ী নব বর্ষ ২০১৮।৩১শে ডিসেম্বর মধ্য রাতের অপেক্ষায় অপেক্ষিত থাকবেন অনেকেই। আল্লাহ পাক আমাদেরকে এই দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন যেন আমরা সর্বাবস্থায় তার আদেশ মেনে চলি। আমাদের চিন্তা চেতনা এমন হয়ে যাচ্ছে নামাজ আদায় করা ইবাদত হালাল রুজি রোজগার নয়,রোজা রাখা ইবাদত হারাম থেকে বেঁচে থাকা নয় ।
এ মনোভাব নিয়ে হিসাব নিকাশ করলে দেখা যায় দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাতে এক ঘন্টার মতো সময় ব্যয় হবে। বাকি ২৩ ঘন্টা নিজ কাজে ব্যায় হবে,অথচ উম্মতে মোহাম্মদীর হায়াত অতি অল্প।অল্প সময়ে অনেক কিছুই করতে হবে।এ ভাবে চলা উচিত যে খাবার খাব এ উদ্দেশ্যে যে খানা খেলে শরীরে শক্তি আসবে শক্তি যোগাড় হলে ইবাদত করতে পারব,ঘুমাব এ উদ্দেশ্যে যে ঘুমালে শরীরের ক্লান্তি দূর হবে আর ক্লান্তি দূর হলে একাগ্র চিত্তে ইবাদত করা যাবে,ইস্তেঞ্জা করব এ উদ্দেশ্যে যে ইস্তেঞ্জা করলে অস্থিরতা দূর হবে ও মনে প্রশান্তি লাভ করবে , অস্থিরতা দূর ও  মনে প্রশান্তি লাভ করলে নিশ্চিন্তে ইবাদত করা যাবে।মোট কথা আমাদের عادت তথা অভ্যাসকে যে গুলো আমরা প্রতিদিন করি বা মানবিকতার কারণে যে কাজ সমূহ করে থাকি নিয়্যাতের মাধ্যমে ইবাদতে পরিণত হয়ে যাচ্ছে উদাহরণ স্বরূপ মৃতব্যক্তির নামাজে জানাজায় শরিক হওয়া ও দাফন কাফন সম্পন্ন করা লোকেরা মানবিকতার কারণে করে থাকে কিন্তু যদি নিয়্যাত করে নেয় তাহলেতো এই কাজটি ইবাদতে পরিণত হয়ে যায়, তাই আমাদের এভাবে চলা উচিত যেন জীবনের এক পল ও যেন ইবাদত বিহীন না হয়।
উৎসব সাধারণত একটি
জাতির ধর্মীয় মূল্যবোধের সাথে সম্পৃক্ত হয়।
উৎসবের উপলক্ষ্যগুলো খোঁজ করলে পাওয়া যাবে
তাতে রয়েছে উৎসব পালনকারী জাতির ধমনীতে
প্রবাহিত ধর্মীয় বিশ্বাস, ধর্মীয় অনুভূতি, ধর্মীয়
সংস্কার ও ধর্মীয় ধ্যান-ধারণার ছোঁয়া।
উদাহরণস্বরূপ খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বড় দিন
তাদের বিশ্বাসমতে স্রষ্টার পুত্রের জন্মদিন।
মধ্যযুগে ইউরোপীয় দেশগুলোতে জুলিয়ান
ক্যালেন্ডার অনুযায়ী নববর্ষ পালিত হতো ২৫শে
মার্চ এবং তা পালনের উপলক্ষ্য ছিল, ঐ দিন
খ্রিস্টীয় মতবাদ অনুযায়ী মাতা মেরীর নিকট এ
মর্মে ওসি বাণী প্রেরিত হয় যে, মেরী ঈশ্বরের
পুত্র জন্ম দিতে যাচ্ছেন। পরবর্তীতে ১৫৮২ সালে
গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডারের সূচনার পর রোমক
ক্যাথলিক দেশগুলো পয়লা জানুয়ারি নববর্ষ
উদযাপন করা আরম্ভ করে। ঐতিহ্যগতভাবে এ
দিনটি একটি ধর্মীয় উৎসব হিসেবেই পালিত হত।
ইহুদীদের নববর্ষ ‘রোশ হাশানাহ’ ওল্ড
টেস্টামেন্টে বর্ণিত ইহুদীদের ধর্মীয় পবিত্র দিন
‘সাবাত’ হিসেবে পালিত হয়।
এমনিভাবে প্রায় সকল জাতির উৎসবের মাঝেই
ধর্মীয় চিন্তা-ধারা খুঁজে পাওয়া যাবে। আর
এজন্যই ইসলামের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
পরিষ্কারভাবে মুসলিমদের উৎসবকে নির্ধারণ
করেছেন। ফলে অন্যদের উৎসব মুসলিমদের
সংস্কৃতিতে প্রবেশের কোন সুযোগ নেই।কারণ
রাসুলুল্লাহ (দঃ) এরশাদ করেন ﻣﻦ ﺗﺸﺒﻪ ﺑﻘﻮﻡ ﻓﻬﻮ ﻣﻨﻬﻢ
যে বিজাতিয় কালচার রীতি নীতি অনু্সরণ সে
তাদের দলভুক্ত ,এছাড়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেন: “ ﻟﻜﻞ ﻗﻮﻡ ﻋﻴﺪ ﻭ ﻫﺬﺍ ﻋﻴﺪﻧﺎ প্রত্যেক জাতির নিজস্ব
উৎসব রয়েছে, আর
এটা আমাদের ঈদ।” [বুখারী: ৯৫২; মুসলিম: ৮৯২]
বিখ্যাত ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.)
এ সম্পর্কে বলেন: “উৎসব-অনুষ্ঠান ধর্মীয় বিধান,
সুস্পষ্ট পথনির্দেশ এবং ধর্মীয় আচার-
অনুষ্ঠানেরই একটি অংশ, যা সম্পর্কে
আল্লাহপাক কুরআনে বলেন: ‘ ﻟﻜﻞ ﺟﻌﻠﻨﺎ ﻣﻨﻜﻢ ﺷﺮﻋﺔ ﻭ
ﻣﻨﻬﺎﺟﺎতোমাদের
প্রত্যেকের জন্যই আমি একটি নির্দিষ্ট বিধান
এবং সুস্পষ্ট পথ নির্ধারণ করেছি।’ (সূরা আল-
মায়িদাহ, ৫:৪৮)অপর এক আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন
ﻟﻜﻞ ﺍﻣﺔ ﺟﻌﻠﻨﺎ ﻣﻨﺴﻜﺎ ﻫﻢ ﻧﺎﻛﺴﻮﻩ
প্রতিটি জাতির জন্য আমি
অনুষ্ঠান [সময় ও স্থান] নির্দিষ্ট করে দিয়েছি যা
তাদেরকে পালন করতে হয়।’ (সূরা আল-হাজ্জ্ব,
২২:৬৭)
অতএব, অমুসলিমদের উৎসব-অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া
এবং তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে অংশ নেই।
তাদের উৎসব-অনুষ্ঠানের সাথে একমত পোষণ করার
অর্থ কুফরের সাথে একমত পোষণ করা। আর এসবের
একাংশের সাথে একমত পোষণ করার অর্থ কুফরের
শাখা বিশেষের সাথে একমত হওয়া। উৎসব-
অনুষ্ঠানাদি স্বকীয় বৈশিষ্ট্যের অধিকারী।
উৎসব দ্বারা ধর্মগুলোকে আলাদাভাবে চিহ্নিত
করা যায়। নিঃসন্দেহে তাদের সাথে এসব
অনুষ্ঠান পালনে যোগ দেয়া একজন মুসলমানক
কুফরের দিকে নিয়ে যেতে পারে। আর
বাহ্যিকভাবে এগুলোতে অংশ নেয়া নিঃসন্দেহে
পাপ।
উৎসব অনুষ্ঠান যে প্রতিটি জাতির স্বকীয়
বৈশিষ্ট্য, এর প্রতি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরিষ্কার ইঙ্গিত
করেছেন। তিনি বলেছেন: ‘প্রত্যেক জাতির
নিজস্ব উৎসব রয়েছে। আর এটা আমাদের ঈদ।’
এছাড়া আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণিত:
“রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন [মদীনায়] আসলেন, তখন
তাদের দুটো উৎসবের দিন ছিল। তিনি বললেন, ‘এ
দুটো দিনের তাৎপর্য কি?’ তারা বলল,
‘জাহিলিয়াতের যুগে আমরা এ দুটো দিনে উৎসব
করতাম।’ রাসূল্লাল্লাহ (সা.) বললেন, ‘এ
দিনগুলোর পরিবর্তে আল্লাহ তোমাদের উত্তম
কিছু দিন দিয়েছেন: কুরবানীর ঈদ ও রোযার ঈদ ”।
(সূনান আবু দাউদ) এ হাদীস থেকে দেখা যাচ্ছে
যে, ইসলাম আগমনের পর ইসলাম বহির্ভূত সকল
উৎসবকে বাতিল করে দেয়া হয়েছে এবং
নতুনভাবে উৎসবের জন্য দুটো দিন নির্ধারণ করা
হয়েছে। সেই সাথে অমুসলিমদের অনুসরণে
যাবতীয় উৎসব পালনের পথকে বন্ধ করা হয়েছে।
নববর্ষ উদযাপন সম্পর্কে ইসলামের চেতনা : ইমাম
আবু হানিফা (রহ.)-এর দাদা তার পিতাকে
পারস্যের নওরোযের দিন (নববর্ষের দিন) আলী
(রা.)-এর কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং কিছু
হাদিয়াও পেশ করেছিলেন। (হাদিয়াটি ছিল
নওরোয উপলক্ষ্যে। ফলে) আলী (রা.) বললেন,
“নওরোযুনা কুল্লা ইয়াওম” মুমিনের প্রতিটি দিনই
তো নববর্ষ। (আখবারু আবি হানিফা, সয়মারী)
অর্থাৎ মুমিন প্রতিদিনই তার আমলের হিসাব-
নিকাশ করবে এবং নব উদ্যমে আখেরাতের পাথেয়
সংগ্রহ করবে।
গত বছর যদি ধর্মীয় কাজ ইবাদত বন্দেগীতে কাটাতে
পারি তাহলে আরেকটি নতুন বর্ষ পাওয়ার কারণে
যে নব বর্ষ দান করলো তার কৃতজ্ঞতা আদায় করা
,আর যদি তা ভাল কাজে ব্যয় না করতে পারি কষ্ট ও
ব্যথা অনুভব হওয়া উচিৎ।যেমন কবি বলেন ﻳﺴﺮ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻣﺎ
ﺫﻫﺐ ﺍﻟﻠﻴﺎﻟﻲ ﻭﻟﻜﻦ ﺫﻫﺎﺑﻬﻦ ﻟﻪ ﺫﻫﺎﺏ
  কালের আবর্তে মানুষ খুশি হয়,কিন্তু সময়
অতিক্রান্ত হওয়ায় মানুষেরও চলে যাওয়ার সময় হয়ে
যায়
তাই নববর্ষ উপলক্ষ্যে পরস্পরে
উপহার বা প্রেজেন্টশন আদান-প্রদান এবং
শুভেচ্ছা বিনিময় নাজায়িয। নতুন বছর নতুন কল্যাণ
বয়ে আনে, দূরীভূত হয় পুরোনো কষ্ট ও ব্যর্থতার
গ্লানি এধরনের কোন তত্ত্ব ইসলামে আদৌ
সমর্থিত নয়, বরং নতুন বছরের সাথে কল্যাণের
শুভাগমনের ধারণা আদিযুগের প্রকৃতি-পূজারী
মানুষের কুসংস্কারাচ্ছন্ন ধ্যান-ধারণার
অবশিষ্টাংশ। এ ধরনের কুসংস্কারের কোন স্থান
ইসলামে নেই। বরং মুসলিমের জীবনে প্রতিটি
মুহূর্তই পরম মূল্যবান হীরকখ-, হয় সে এই মুহূর্তকে
আল্লাহর আনুগত্যে ব্যয় করে আখিরাতের পাথেয়
সঞ্চয় করবে, নতুবা আল্লাহর অবাধ্যতায় লিপ্ত
হয়ে শাস্তি যোগ্য হয়ে উঠবে। তাই একজন
মুসলমানের কাছে বছরের প্রথম দিনের কোন
বিশেষ কোন গুরুত্ব ও তাৎপর্য নেই। এর সাথে
জীবনে কল্যাণ-অকল্যাণের গতিপ্রবাহের কোন
দূরতম সম্পর্কও নেই। আর সেক্ষেত্রে
নববর্ষের কি-ই বা তাৎপর্য থাকতে পারে
ইসলামে?
কেউ যদি এ ধারণা পোষণ করে যে, নববর্ষের
প্রারম্ভের সাথে কল্যাণের কোন সম্পর্ক রয়েছে,
তবে সে শিরকে লিপ্ত হল, অর্থাৎ আল্লাহর সাথে
অংশীদার স্থির করল। যদি সে মনে করে যে,
আল্লাহ এই উপলক্ষ দ্বারা মানবজীবনে কল্যাণ
বর্ষণ করেন, তবে সে ছোট শিরকে লিপ্ত হল। আর
শিরক এমন অপরাধ যে, শিরক এমন অপরাধ যে,তা সব
সময় আমলকে নষ্ট করতে থাকে।

রবিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৭

সুখী পরিবার

খাদিজা বসে আছে প্রফুল্ল মনে,একটু পূর্বে মাহবুবের সাথে কথা হয়েছে।
সে মাহবুবের সংসারে এসেছে বছর খানেক হবে কিন্তু এরই মধ্যে একজন অপর জনকে মনে প্রাণে ভালবাসে,সামান্য সময় কথা না হলে বা আসতে দেরী হলে তার পেরেশানীর অন্ত থাকে না।এমনিভাবে খাদিজা কোন কারণে কল না ধরলেও তার স্বামীর পেরেশানীর অন্ত থাকে না।একজন অপর জনের অনুপস্থিতি হাড়ে হাড়ে টের পায়।প্রিয়জনকে কাছে না পেলে বুঝা যায় বুকের ভিতরে কী যেন ব্যাথায় ব্যাথাতুর হয়ে যাচ্ছে,চোখ দিয়ে পানি ঝরিয়ে পড়ে,অনেক অভিমান ও রাগ হয় ,কিন্তু দেখার পর সব অভিমান রাগ উধাও হয়ে যায়,অভিমান ও রাগ সব পানি হয়ে ভালবাসায় পরিণত হয়।
মাহবুব মাঝে মাঝে খাদিজার কোন কাজের প্রশংসা করে ,তাকে খূশী করার জন্য ,তখন খাদেজার মনে হয় জীবনটা সার্থক মনে হয়,মাঝে মাঝে ভাবে মনে হয় সুন্দরভাবে কাজটি হয়নি তাই এমনটা বলছে। পরবর্তিতে সচেতনতাও নিষ্ঠার সাথে কাজ করার চেষ্টা করে ।
মাহবুব সামান্য বেতনে চাকরী করে তা থেকে কিছু টাকা বাচিয়ে কোন বস্তু কিনে তাকে উপহার হিসাবে দেয়।সে এগুলি নাড়িয়ে দেখতেই থাকে তার কাছে মনে হয়পৃথিবীর সবচেয়ে দামী ও সর্বোৎকৃষ্ট বস্তু এনে দিয়েছেন,যতই দেখতে থাকে ততই তার বাধনে আর ও গভীরভাবে জরিয়ে পড়ে আর ভাবে আমার স্বামী আমাকে কতই না  বাসেন ভাল !
মাহবুব যখন তাকে কোন কাজ করার কথা বলেন তখন তার মনে হয় ইহা তার করাই অতীব প্রয়োজন,ইহা বাস্তবায়ন না করলে যেন তার স্বস্তিই হয় না।সে যদি কোন কাজ থেকে নিষেধ করে তখন তার মনে হয় যে ইহাই পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট কাজ , মাহবুবের অবস্থা এরকমই ।খাদিজা মাহবুবের কাছে কোন কিছু আব্দার করে না এ ভয়ে যে যদি তার স্বামী তার আব্দার পূর্ণ করতে না পারে ,তাহলেতো উনি নিজেকে ছোট মনে করবেন,মাহবুব ও এ বিষয়টা অনুধাবন করতে পারে তাই সে ইচ্ছা করেই অনেক সময় তার রুচি হতে পারে এরকম  নানান বস্তু কেনে আনে তার  স্ত্রীর মনোবাঞ্চা পূর্ণ করার জন্য।সে স্বামীর প্রতিটি বস্তু খূব সতর্কতার সাথে হেফাজত করে।স্বামীর কাপড়-চোপড় বা অন্য কিছু অপরিস্কার দেখলেই তা পরিস্কার করার জন্য মন ব্যকুল হয়ে যায়। সাংসারিক আর ও কত কাজ থাকে তাই তার স্বামী ইচ্ছা করেই তার জন্য কোন কাজ পেলে রাখে না , সব সময় নিজের কাজ নিজেই করে নেয়    সে স্ত্রীর এ মনোভাব বুঝতে পেরে খূব আনন্দিত ।কোন সময় কোন কাজ কারণবশতঃ করতে পারে না আবার কোন সময় ইচ্ছা করেই কিছু কাজ তার জন্য রেখে দেয় যাতে সে উৎসাহ না হারিয়ে পেলে।
কোন জায়গায় বেড়াতে গেলে বা কারো বাড়ী যেতে হলে মাহবুব শতবার ভাবে তার নিরাপত্তা নিয়ে,এমনিভাবে তার স্ত্রী ও ভাবে কোন জায়গায় গমন করলে কোন অপ্রীতিকর কোন কিছু ঘটবে কি না?এবং সসম্মানের সাথে চলা-ফেরা করা যায় কি না?
খাদিজা অসুস্থ হলে তার পেরেশানীর অন্ত থাকে না,এমনিভাবে তার স্বামী অসুস্থ থাকলে ও তার পেরেশানীর অন্ত থাকে না ।
স্বামীর কোন দোষ তার চোখে পড়লে তার স্বামী বিষয়টি আচঁ করতে পেরে শোধরে যান,এমনিভাবে তার স্বামীর কেউ বদনাম করলেও তার খূব কষ্ট অনূভব হয়,তার স্বামী স্ত্রীর মূখের মলিনতা দেখে বুঝে পেলেন কিছু একটা হয়েছে তাই কৌশলে এ বিষয়টা জেনে নিয়ে সংশোধন হয়ে যান বা এর পেছনে কোন কারণ থাকলে এর সদুত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেন,তদ্রুপ তার স্ত্রীর অবস্থা ও।
যতই দিন যাচ্ছে মাহবুবের কাছে খাদেজাকে আগের চেয়ে আকর্ষণীয় ও সুন্দরী মনে হচ্ছে,এমনিভাবে খাদেজার কাছে ও তার স্বামী যেন আগের চেয়ে সুঠাম সুন্দর দেহের অধিকারী মনে হয়।
এ কথা গুলো খাদেজা কেদারায় বসে তম্বয় হয়ে ভাবতেছিলেন  যে তেমন কিছু পায়নি কিন্তু মনে হচ্ছে সমগ্র পৃথিবীর সব কিছু আমি পেয়ে গেছি, স্বামীর ভাল ভাবে সেবা করতে পারিনি কিন্তু স্বামীর মনে হয় আমাকে পেয়ে  তিনি সব কিছু পেয়েছেন।
কথা গুলো আমার মনের কল্পনা , একটি সূখী পরিবারের চিত্রায়ন  করার চেষ্টা করেছি মাত্র। বর্তমানে প্রায় জায়গায় সংসারে অ-শান্তির খবর পাওয়া যাচ্ছে যার একমাত্র কারণ আমি মনে করি সিনেমার চরিত্রে অধিক আবেগ আপ্লুত হওয়া ও অধিক আকর্ষণ , যেমন কোন পন্য বাজারে ব্যবসা করতে হলে নায়ক নায়িকাদের দ্বারা একটা বিজ্ঞাপন ,তারপর তা বাজারে খূব প্রচলন হয়।অনেক সময় কাপড়ের দোকানে মেয়েদের বলতে শুনি অমুক ছবির কাপড় আছে কী?  সেজে গুজে নায়িকাদের মত , হাটেও নায়িকাদের মত করে। মনে মনে নায়িকা ভাব ,সুখের বিরাট সপ্ন,বিবাহের পর প্রিয়জনের মধ্যে সপ্নের যে চিত্র ছিল তার অভাব,অন্তরে জমতে থাকে ঘৃণা,ঘৃণা বাড়তে বাড়তে এক সময় অশ্রদ্ধাতে পরিণত হয়,আর অশ্রদ্ধাতেই অমিলের আরম্ভ হয় আর তা শেষ পর্যন্ত ছাড়া-ছাড়ি পর্যন্ত গড়ায়।এমনি ভাবে ছেলেরা তাদের হবু স্ত্রীকে নিয়ে অসম্ভব কল্পনা জল্পনা করতে থাকে। বিয়ের পর যখন প্রিয়জনের মধ্যে তার আশানুযায়ী হয়না তখন আরম্ভ হয় সংসার নষ্ট করার একেকটা ধাপ। কারণ সিমেনাতে নায়ক ও নায়িকাকে অল রাউন্ডার হিসেবে দেখেছে আর বাস্তব জীবনে এর উল্টোটা পাচ্ছে  ।বাস্তব কথা হচ্ছে সর্ব গুণে গুণাণ্বিত লোক পাওয়াই কঠিন তাই যা পাওয়া যাচ্ছে তাই নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা বুদ্ধমানের কাজ।

শনিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৭

মীলাদ ও জম্মদিবস


হিজরী সনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ মাস হল রবিউল আউয়াল।রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ মাসে জম্মগ্রহণ করেছেন,এ মাসে হিজরত করেছেন এবং এ মাসে ইন্তেকাল করেছেন ।
হিন্দ-উপমহাদেশে ১২ রবিউল আউয়ালকে কেন্দ্র করে নানাবিধ অনুষ্ঠান হয়।রবিউল আউয়াল আসলেই সিরাতুন্নবী আর মিলাদুন্নবী উৎসব পালনের ধুম পড়ে যায়।এ দিনে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জম্মদিন হিসেবে মিছিল,মিটিং,র্যালি,এমনকি বেপর্দা নারী দ্বারা স্বাগত মিছিলও বের করা হয়।সেমিনার সিম্পোজিয়ামে বক্তাদের মুখে নবী প্রেমের খই ফোটে।কিন্তু এই কথাগুলি অন্তরে প্রবেশ করে না ।নবীজী দ.এর সীরাত আলোচনা করা বা শোনা অবশ্যই নেআমতের কাজ,কিন্তু
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনী কী শুধু  রবিউল আউয়ালেই সীমিত?
তাছাড়া যে ব্যক্তির জম্মদিবস পালন করছি তা সেই ব্যক্তির নৈতিকতার পক্ষে না বিপক্ষে ?তা কী ভেবে দেখেছেন?
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রায় তেষট্টি বছর জীবিত ছিলেন এবং নবুওয়ত প্রাপ্তির পর তিনি তেইশ বছর জীবিত ছিলেন ,এ দীর্ঘ সময়ে কত রবিউল আউয়াল আগমন ও প্রস্থান করেছে কিন্তু কোন সময়ে জম্মদিবস পালন করেছেন একটি বর্ণনা নাই ।
সাহাবায়ে কেরাম নবীজির জন্য ব্যকুল ছিলেন এবং তারা রাসূল দ.এর জন্য মায়া মুহাব্বত কোন ক্রমেই কম ছিল না তথাপি তারাও এ দিবস পালন করবে দূরের কথা কেউ এধরণের উদ্ভট চিন্তা করেননি।নবীজি দ. ইন্তেকালের পরে প্রায় সোয়া লক্ষ্য সাহাবায়ে কেরাম জীবিত ছিলেন কিন্তু কেউ তা কেন পালন করেননি যা নবীর মুহাব্বতের পরিচায়ক ছিল?
যদি জম্ম দিবস পালন করা বৈধ হত তাহলে সাহাবায়ে কেরামগণের জম্ম দিবস পালন করতে দেখা যায় না কেন?যদি জম্নদিন পালন বৈধতা দেওয়া যায় আর সোয়া লক্ষ্য সাহাবায়ে কেরাম নবীজি দ. ইন্তেকালের পর জীবিত ছিলেন তাহলে বছরে এমন কোন দিন পাওয়া যাবে না যে একজন সাহাবী জম্ম গ্রহণ করেছেন।আর সাহাবায়ে কেরাম থেকে এ পর্যন্ত মিলালেতো দৈনিক কত বার যে জম্ম দিন পালন করতে হবে বলাই কঠিন ।জম্ম তারিখ পালন বৈধ হলে একই যুক্তিতে মৃত্যু দিন ও পালন করা বৈধতা দিতে হয়। সারা বছরই একদল আরেক দলে মৃত্যু দিবসের কষ্ট পালন করা কী ভাল দেখায়?তাছাড়া হতে পারে এ দিন এক পরিবারের একজনের জম্ম আরেক জনের মৃত্যু এমতাবস্থায় কি অনুভূতি হবে?
তাছাড়া জম্ম দিবস আর মৃত্যু দিবস পালন করা কী শুধু কাজ?আর কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজ নেই?

ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যায় ঈসা আলাইহিস সালামকে আসমানে উঠিয়ে নেওয়ার প্রায় তিনশত বছর পর কিছু লোক বলে যে ঈসা আলাইহিস সালামের জম্মদিন  পালন করব তখনকার সময়ে যারা সত্যিকার অর্থে ঈসায়ী ছিল তারা বাধা প্রধান করলো।উদ্যোক্তারা বললো এতে খারাপের কি আছে সবাই একত্রিত হয়ে জীবনী আলোচনা হবে।ব্যস শুরু হয়ে গেল ক্রিষ্টমাস ডে।প্রথম প্রথম কিছু লোক গির্জায় জমায়েত হতো আর পাদ্রী ঈসা আলাইহিস সালামের জীবনী আলোচনা করতেন ,লোকেরা চলে যেত  মজলিশ শেষ হয়ে যেত,কিছু দিন অতিবাহিত হওয়ার পর  তা পুরাতন অনুভব হওয়ায় কিছু কবিতা আবৃত্তি ও আরম্ভ হলো,কিছু দিন যাওয়ার পর বাজনা ও নাচ সংযোজন হলো,এভাবে চলতে চলতে বর্তমানে ২৫ ডিসেম্বর নারী উপভোগ ও মদ নিয়ে সময় কাটানোর প্রচলন হয়ে গেল।অথচ তা শুরু হয়েছিল জীবনী নিয়ে আর কোথায় গিয়ে পৌছলো?

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুনিয়ায় আগমন দিন হয়েছিল এ নিয়ে ও বিভিন্ন বর্ণনা রয়েছে। হাদীস দ্বারা রাসূল দ. এর জম্মদিন সোমবার ও জম্ম সন اصحاب الفيل  বা হস্তি বাহিনী যে বছর মক্কা শরীফে আক্রমন করেছিল সে বছরই রাসূলুল্লাহ দ. এর জম্ম জানতে পারি,কিন্তু কোন মাস ছিল?কত তারিখ ছিল ?হাদীসে তা জানা যায় না।এ কারণে ঐতিহাসিকদের মাঝে এ নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে
কারো কারো মতে, তিনি মুহাররম মাসে জন্মগ্রহণ করেছেন।
অন্য মতে, তিনি সফর মাসে জন্মগ্রহণ করেছেন।
কারো মতে, তিনি রবিউল আউআল মাসের ২ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। দ্বিতীয় হিজরী শতকের অন্যতম ঐতিহাসিক ও মাগাযী প্রণেতা মুহাদ্দিস আবু মা‘শার নাজীহ ইবন আব্দুর রহমান আস-সিনদী (১৭০হি:) এই মতটি গ্রহণ করেছেন।
অন্য মতে, তাঁর জন্ম তারিখ রবিউল আউআল মাসের ৮ তারিখ। আল্লামা কাসতাল্লানী ও যারকানীর বর্ণনায় এই মতটিই অধিকাংশ মুহাদ্দিস গ্রহণ করেছেন। এই মতটি দুইজন সাহাবী ইবনে আববাস ও জুবাইর ইবনে মুতয়িম রাদিয়াল্লাহু আনহুম  থেকে বর্ণিত। অধিকাংশ ঐতিহাসিক ও সীরাতুন্নবী বিশেষজ্ঞ এই মতটি গ্রহণ করেছেন বলে তারা উল্লেখ করেছেন। প্রখ্যাত তাবেয়ী ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে মুসলিম ইবনে শিহাব আয-যুহরী (১২৫হি:) তাঁর উস্তাদ প্রথম শতাব্দীর প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও বংশধারা সম্পর্কে বিজ্ঞ ঐতিহাসিক তাবেয়ী মুহাম্মাদ ইবনে জুবাইর ইবনে মুতয়িম (১০০হি:) থেকে এই মতটি বর্ণনা করেছেন। কাসতালানী বলেন: ‘মুহাম্মাদ ইবনে জুবাইর আরবদের বংশ পরিচিতি ও আরবদের ইতিহাস সম্পর্কে অভিজ্ঞ ছিলেন। রাসূলুল্লাহ সোয়াল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম তারিখ সম্পর্কিত এই মতটি তিনি তাঁর পিতা সাহাবী জুবাইর ইবনে মুতয়িম থেকে গ্রহণ করেছেন। স্পেনের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফকিহ আলী ইবনে আহমদ ইবনে হাযম (৪৫৬হি:) ও মুহাম্মাদ ইবনে ফাতুহ আল-হুমাইদী (৪৮৮হি:) এই মতটিকে গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেছেন। স্পেনের মুহাদ্দিস আল্লামা ইউসূফ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুল বার ( ৪৬৩ হি:) উল্লেখ করেছেন যে, ঐতিহাসিকগণ এই মতটিই সঠিক বলে মনে করেন। মীলাদের উপর প্রথম গ্রন্থ রচনাকারী আল্লামা আবুল খাত্তাব ইবনে দেহিয়া (৬৩৩ হি:) ঈদে মীলাদুন্নবীর উপর লিখিত ‘আত-তানবীর ফী মাওলিদিল বাশির আন নাযীর’ গ্রন্থে এই মতটিকেই গ্রহণ করেছেন
অন্য মতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম তারিখ ১০ই রবিউল আউয়াল। এই মতটি ইমাম হুসাইনের পৌত্র মুহাম্মাদ ইবন আলী আল বাকের (১১৪হি:) থেকে বর্ণিত। দ্বিতীয় শতাব্দীর প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আমির ইবনে শারাহিল আশ শা‘বী (১০৪হি:) থেকেও এই মতটি বর্ণিত। ঐতিহাসিক মুহাম্মাদ ইবনে উমর আল-ওয়াকেদী (২০৭হি:) এই মত গ্রহণ করেছেন। ইবনে সা‘দ তার বিখ্যাত ‘‘আত-তাবাকাতুল কুবরা’’-য় শুধু দুইটি মত উল্লেখ করেছেন, ২ তারিখ ও ১০ তারিখ।
কারো মতে, রাসূলুল্লাহ সোয়াল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম তারিখ ১২ রবিউল আউয়াল। এই মতটি হিজরী দ্বিতীয় শতাব্দীর প্রখ্যাত ঐতিহাসিক মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক (১৫১হি:) গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেছেন: ‘রাসূলুল্লাহ সোয়াল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাতীর বছরে রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে জন্মগ্রহণ করেছেন।’ এখানে লক্ষণীয় যে, ইবনে ইসহাক সীরাতুন্নবীর সকল তথ্য সাধারণত: সনদ সহ বর্ণনা করেছেন, কিন্তু এই তথ্যটির জন্য কোন সনদ উল্লেখ করেন নি। কোথা থেকে তিনি এই তথ্যটি গ্রহণ করেছেন তাও জানান নি বা সনদসহ প্রথম শতাব্দীর কোন সাহাবী বা তাবেয়ী থেকে মতটি বর্ণনা করেন নি। এ জন্য অনেক গবেষক এই মতটিকে দুর্বল বলে উল্লেখ করেছেন।
অন্য মতে রাসূলুল্লাহ সোয়াল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম তারিখ ১৭ই রবিউল আউয়াল।
অন্য মতে তাঁর জন্ম তারিখ ২২ শে রবিউল আউয়াল।
অন্য মতে তিনি রবিউস সানী মাসে জন্মগ্রহণ করেছেন।
অন্য মতে তিনি রজব মাসে জন্মগ্রহণ করেছেন। ।
অন্য মতে তিনি রমযান মাসে জন্মগ্রহণ করেছেন। ৩য় হিজরী শতকের প্রখ্যাত ঐতিহাসিক যুবাইর ইবনে বাক্কার (২৫৬ হি:) থেকে এই মতটি বর্ণিত। তাঁর মতের পক্ষে যুক্তি হলো যে, রাসূলুল্লাহ সোয়াল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বসম্মতভাবে রমযান মাসে নবুয়ত পেয়েছেন। তিনি ৪০ বৎসর পূর্ণ হওয়ার পর নবুয়ত পেয়েছেন। তাহলে তাঁর জন্ম অবশ্যই রমযানে হবে।
যদি মীলাদ বা জম্ম দিবস পালন বৈধ হত তাহলে এত মতবিরোধের অবকাশ ছিল না।আর জম্ম দিবস পালন শুরু হয়
উবাইদ বংশের রাফেযী ইসমাঈলী শিয়াদের দ্বারা যারা ফাতেমী বংশের নামে আফ্রিকার উত্তরাংশে রাজত্ব স্থাপন করেন। ৩৫৮ হিজরীতে (৯৬৯ খ্রি:) তারা মিশর দখল করে তাকে ফাতেমী রাষ্ট্রের কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলেন এবং পরবতী ২ শতাব্দীরও অধিককাল মিশরে তাদের শাসন ও কর্তৃত্ব বজায় থাকে। গাজী সালাহুদ্দীন আইঊবীর মিশরের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের মাধ্যমে ৫৬৭ হিজরীতে (১১৭২খ্রি:) মিশরের ফাতেমী শিয়া রাজবংশের সমাপ্তি ঘটে। এই দুই শতাব্দীর শাসনকালে মিশরের ইসমাঈলী শিয়া শাসকগণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ২ ঈদ ছাড়াও আরো বিভিন্ন দিন পালন করতেন, তন্মধ্যে অধিকাংশই ছিল জন্মদিন। তাঁরা অত্যন্ত আনন্দ, উৎসব ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ৫টি জন্মদিন পালন করতেন: (১) রাসূলুল্লাহ সোয়াল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মদিন, (২) আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুর জন্মদিন, (৩) ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহার জন্মদিন, (৪) হাসান রাদিয়াল্লাহু আনহুর জন্মদিন ও (৫) হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুর জন্মদিন। এ ছাড়াও তারা তাদের জীবিত খলীফার জন্মদিন পালন করতেন এবং ‘মীলাদ’ নামে ঈসা আলাইহিস সালামের জন্মদিন (বড়দিন বা ক্রীসমাস), যা মিশরের খ্রিষ্টানদের মধ্যে প্রচলিত ছিল তা আনন্দ প্রকাশ, মিষ্টি ও উপহার বিতরণের মধ্য দিয়ে উদযাপন করতেন।
দেখা যাচ্ছে তবয়ে তাবেয়ীনদের অনেক পরে মীলাদ আনুষ্ঠানিকভাবে শিয়ারা উদযাপন করেছিল এবং হিজরী আটশত শতাব্দী পর্যন্ত সাধারণ মুসলমানরা পালন করতো না।

আমাদের দেশে তিনটি সন প্রচলন আছে ।আরবী,বাংলা,ইংরেজী।আরবী সন শুরু হয় মুহাররম থেকে এবং শেষ যিল কা'দায় ।আরবী মাস ঊনত্রিশ বা ত্রিশ দিনে হয় ,এক বছর হয় 355/356 দিনে।বাংলা সনের মাস হয় 30/31 দিনে,বছর হয় 365 দিনে এমনিভাবে ঈসায়ী সনের মাস 28/29/30/31 দিনে হয়, বছর হয় 365/366দিনে । এখন আপনি জম্ম দিনকে আসল ধরে পালন করবেন না তারিখকে আসল ধরে এবং কোন সন অনুযায়ী পালন করবেন?
যদি দিন ধরে পালন করেন তাহলে আগামী বছর এ তারিখ পাওয়া যাবে না ।যদি তারিখকে মূল ধরে পালন করা হয় তাহলে ও আগামি বছর এদিন পাওয়া না ,তাছাড়া আপনি কোন সনের তারিখ অনুযায়ী পালন করবেন?কোন একটিকে হয়তো প্রাধান্য দিবেন,কিন্তু কেন প্রাধান্য দিবেন?অপর সন দুটি দোষ করলো কী? আরবী সনে দশ দিন বেশ কম হবে ,এবং ঈসায়ী সনে ও প্রতি বছর একদিন বেশী হবে এবং প্রতি লিপ ইয়ারে দুদিন করে বেশী হবে এ ভাবে প্রতি বছরই বেশী প্রার্থক্য হতে থাকবে ।আর জম্মদিবসতো দুনিয়ায় আগমন উপলক্ষে হচ্ছে আর যে দিন সে এ ধরায় এ দিনতো জম্ম হয়নি ।অনেক মা এমন আছেন যারা সন্তান কোন দিন গর্ভে সন্তানের জম্ম হয়েছে ?সঠিক উত্তর দিতে পারেন না, আল্লাহ পাক বলেন তিনি জানেন যা কিছু গর্ভে আছে, আল্লাহপাক নারীদের ভ্রুণের সর্ব বিষয়ে জ্ঞান রয়েছে ,বাচ্ছা কোন দিন মাতৃ গর্ভে এসেছে?এবং এ দ্বারা ভবিষ্যতে কী হবে আল্লাহর জানা আছে ।তাই নিশ্চিত জম্ম তারিখ মানুষের পক্ষে জানা অসম্ভব।তাই জম্ম দিবস পালন করা কিসের উপর ভিত্তি করে হবে?
ঈসায়ী সন হযরত ঈসা আ. এর জম্ম থেকে গণনা শুরু হয়েছে 01 02 করে বর্তমানে2017 সাল পর্যন্ত গড়িয়ে যাচ্ছে তথাপি কেউ এ কথা বলে না যে গত বছর ফিরে এসেছে
উপসংহারঃগত দিন গত মাস গত বছর কোনটাই ফিরে আসে না তাহলে জম্ম দিবস কিসের উপর ভিত্তি করে পালন করবেন?