বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

মুহাররম ও আশুরা

---------------------শামসুল আবেদীন
গতকাল 21/10/2017 ঈসায়ী বাংলার
আকাশে চাদ দেখা গিয়েছে।আরবী নব
বর্ষ ১৪৩৯হিজরী।
আরবী বর্ষের প্রথম মাস মুহাররম।
এর আভিধানিক অর্থ নিষিদ্ধ বা
সম্মানিত। তখনকার সময়ের আরবরা কলহ
বিবাদ,যুদ্ধ বিগ্ৰহ ও রক্তপাত এ মাসে
নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু ইসলাম আগমনের পর
নিষিদ্ধ অর্থ
রহিত করে দেয় জিহাদ করা আর নিষিদ্ধ
থাকেনি। অবশ্য দ্বিতীয় অর্থ এখন ও
বলবৎ আছে। তাই এ মাসে এবাদতের
প্রতি বিশেষভাবে যত্নবান হওয়া উচিত।
কুরআন মাজিদে এ মাসকে আরও তিন
মাসের সাথে উল্লেখ করে বলেন আর এর
মধ্যে চারটি মাস সম্মানী(যথা
যিলকদ,যিলহজ,মুহাররাম,রজব)বলার
অপেক্ষা রাখে না এরমধ্যে মুহাররাম
অন্যতম।
আল্লামা জাসসাস রহ. বয়ানুল কুরআনে
উল্লেখ করেন যে এই চার মাসের
বৈশিষ্ট হল ,যারা এই চার মাসে
বিশেষভাবে ইবাদত করবে আল্লাহ
তাআলা বাকি আট মাসে ইবাদত করার
তাওফিক দান করবেন ।অনুরুপ ভাবে যে এ
মাস সমূহে পাপ থেকে নিজেকে
বাচিয়ে রাখবে বাকি মাস সমূহে পাপ
কার্য থেকে বাচা সহজ হবে।
এ মাসে ঐতিহাসিক ঘটনা সংঘটিত
হয়েছে।
যেমন এ মাসের দশম তারিখে আশুরার
দিনে হজরত আদম আ. এর তওবা কবুল হয়।
এই দিনে হজরত নূহ আলাহিস সালাম এর
নৌকা মহাপ্লাবন থেকে মুক্তি পায়।এই
দিনে হজরত ইউনুস আলাহিস সালাম
মাছের পেট থেকে বের হন ও তার
জাতীর তওবা কবুল হয়। এই দিনে হজরত
ইউসুফ আলাহিস সালাম কে কূপ থেকে
বের করা হয়।
মূসা আলাহিস সালাম এর অনুসারী বনী
ইস্রাইল এই দিনে ফেরাউন থেকে মুক্তি
পায় এবং ফেরাউন তার সভাসদ ও বিশাল
সেনা বাহিনী সহ সমুদ্রে নিমজ্জিত হয়।
এই দিনে হজরত সুলাইমান আলাহিস
সালামকে বাদশাহী প্রদান করা হয়। এই
দিনে হজরত হজরত ঈসা আলাহিস সালাম
জম্ম গ্রহণ করেন ও এই তারিখে আবার
আসমানে উঠিয়ে নেয়া হয়।
সর্বশেষ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওসাল্লামের দৌহিত্র হুসাইন
রাযিয়াল্লাহু আনহু শাহাদতের ঘটনা এ
মাসেই সংঘটিত হয়।
এসব ঘটনা সম্পর্কে যদিও আপত্তি আছে
তদুপরি এ কথা সত্য যে অনেক সহিহ
হাদিসে এর বর্ণনা রয়েছে।
এ মাসে করণীয় কিছু আমল,
১.এ মাসে সাধ্যানুযায়ী বেশী বেশী
রোজা রাখা।
২.বেশী বেশী তওবা ও ইস্তেগফার করা
৩.পরিবার পরিজনের প্রয়োজনে অন্যান্য
দিনের তুলনায় সামর্থানুযায়ী অধিক ব্যয়
করা।
৪.আশুরার দিন রোজা রাখা এবং ৯/১০
যে কোন একদিন আশুরার সাথে
মিলানো।
আশুরার ফযিলত সম্পর্কে অনেক হাদীস
রয়েছে
১.আয়েশা রা. থেকে বর্ণীত রমজানের
রোজা ফরজ হওয়ার পূর্বে হুজুর
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লাম
আশুরার রোজা রাখতেন। রমজানের
রোজা ফরজ হওয়ার পর হুজুর সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওসাল্লাম বললেন যার ইচ্ছা
আশুরার রোজা রাখবে ।
ﻋﻦ ﺍﺑﻲ ﻗﺘﺎﺩﺓ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠَّﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ
ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺻﻴﺎﻡ ﻳﻮﻡ ﻋﺮﻓﺔ ﺍﺣﺘﺴﺐ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ
ﺃﻥ ﻳﻜﻔﺮ ﺍﻟﺴﻨﺔ ﺍﻟﺘﻲ ﻗﻠﺒﻪ ﻭﺍﻟﺴﻨﺔ ﺍﻟﺘﻲ ﺑﻌﺪﻩ ﻭ ﺻﻴﺎﻡ ﻳﻮﻡ
ﻋﺎﺷﻮﺭﺍﺀ ﺍﺣﺘﺴﺐ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﺃﻥ ﻳﻜﻔﺮ ﺍﻟﺴﻨﺔ ﺍﻟﺘﻲ ﻗﻠﺒﻪ
২-রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওসাল্লাম এরশাদ করেন যে আমি
আশাবাদি আশুরার রোজার অসিলায়
আল্লাহ তাআলা অতীতের এক বছরের
(ছগিরা)গোনাহ মাফ করে দিবেন
(মুসলিম)
৩-হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লাম
কখনো আশুরার রোজা ছাড়তেন না
(নাসায়ী)
৪-হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লাম
রমজান ও আশুরার দিনে যেভাবে রোজা
রাখতে দেখা গেছে ,সে রকম অন্য সময়
দেখা যায়নি(বুখারী)
৫-রমজানের পর যদি রোজা রাখতে চাও
তাহলে মুহাররাম মাসে রোজা রাখো ( ﻣﺎ
ﺛﺒﺖ ﺑﺎﻟﺴﻨﺔ )
৬-আশুরার দিনে যে ব্যক্তি পরিবার
পরিজনের জন্য মুক্ত হাতে ব্যয় করবে
আল্লাহ তাআলা তার সারা বছরের
রোজগারে বরকত দিবেন।( ﺭﻭﺍﻩ ﺭﺯﻳﻦ ﻭﺍﻟﺒﻴﻬﻘﻲ )
তবে একটি কথা বিশেষভাবে মনে রাখা
প্রয়োজন যে হজরত হুসাইন রাযিয়াল্লাহু
আনহুএর শাহাদৎ বরণের কারণে আশুরার
দিনের ফযিলত ও রোজার আদেশ
আসেনি। বরং হজরত হুসাইন রাযিয়াল্লাহু
আনহুর কারবালার ঘটনা ঘটার পূর্বে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওসাল্লাম আশুরার ফযিলত ও রোজার
ফযিলত বর্ণনা দিয়েছেন এবং রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লামের
ইন্তেকালের প্রায় পঞ্চাশ বছর পর তিনি
শহীদ হন ,তাই হজরত হুসাইন রাযিয়াল্লাহু
আনহু শাহাদতের কারণে আশুরায় ফযিলত
এসেছে এ ধরণের কোন প্রমাণ ইসলামে
নেই।হ্যা এতটুকু বলা যাবে যে হজরত
হুসাইন রাযিয়াল্লাহু আনহুর শাহাদতের
জন্য আল্লাহ তাআলা এই বরকতময়
দিনকে পসন্দ করেছেন ,যে কারণে তার
শাহাদতের ফযিলত আর ও বৃদ্ধি পেয়েছে

এ মাসে বর্জনীয় কাজ
.তাযিয়া
কাউকে সান্তনা দেওয়া,আর পরিভাষায়
তাযিয়া বলা হয়
আশুরার সময় মাযারের মত কবর নির্মাণ
করা । ইহা অনেক ফাসেকী ও শিরিকের
ফসল ।কার ও বিশ্বাস যে হজরত হুসাইন
রাযিয়াল্লাহু আনহু স্বয়ং এতে সমাসীন
আছেন।এ বিশ্বাসের বর্শবর্তী হয়ে
অনেকে নযর নিয়াজ দিয়ে থাকে ।
গায়রুল্লাহর নামে এসব হওয়ার কারণে এ
ধরণের নযর নিয়াজ শেরেকের
অন্তর্ভূক্ত,এ ধরণের দ্রব্যাদি খাওয়া ও
হারাম।তাযিয়ার সামনে হাত জোর করে
দাড়ানো ,তার দিকে পিঠ না
ফেরানো,তাতে বিভিন্ন ধরণের প্রতিক
ব্যনার টানানো , তাযিয়াকে যিয়ারত
বলা এছাড়া আর ও যত গর্হিত কাজ
আছে এক প্রকার শিরিকের অন্তর্ভূক্ত ।
.ঢাক ঢোল ও বাজনা বাজানো
আশুরার আগে ও আশুরার দিন সমূহে ঢাক
ঢোল আর বাদ্য যন্ত্রের আওয়াজে
পরিবথশ কলুষিত হয়ে ওঠে।কাজটি
একদিকে ইসলাম বিরোধী অপর দিকে
তেমনি বিভেকের পরিপন্থি ।একটি
শোক মিছিল বা একটি শোক দিবসকে
কেন্দ্র করে ঢোল ও তবলার এই আওয়াজ
আর জারী ও কাওয়ালীর সূর লহরী কেমন
শোক দিবস পালন হয় তা আমাদের
বোধগম্য নয়।
.আহাজারী করা
কিছু লোক এ দিন হায় হাসান,হায় হুসাইন
বলে আহাজারী করতে থাকে,বুক
চাপড়াতে থাকে ।এধরণের কাজ থেকে
কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। হজরত
আবু সাইদ খুদরী রাযিয়াল্লাহু আনহু
থেকে বর্ণীত আছে যে রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লাম
আহাজারকারী এবং শ্রবণকারীর উপর
লানত করেছেন।
.শোকের পোষাক পরা
আশুরা উপলক্ষে বিশেষ রঙ্গের বা
শোকের পোষাক পরিধান করা ও নিষিদ্ধ
কাজ।একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওসাল্লাম একটি জানাযায়
গিয়ে দেখেন লোক জন বিশেষ ধরণের
পোষাক পরে শোক পালন করছে।রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লাম অত্যন্ত
অসন্তুষ্ট হয়ে বললেন তোমরা কি
জাহেলী কাজ শুরু করেছ ?না জাহেলী
প্রথার অনুসরণ করছো?
আমার মনে চাচ্ছিল তোমাদর জন্য এমন
বদ দোয়া করি যে তোমাদের চেহারা
যেন বিকৃত হয়ে যায় ।এ কথা বলার পর
সবাই পোষাক খোলে তাওবা করল(ইবনে
মাজাহ)
এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় নানা ধরণের
কুপ্রথা প্রচলন থাকতে পারে ,ঈমান আমল
হেফাজতের জন্য এ সব থেকে নিজে
বাচা ও অপরকে বাচানো প্রয়োজন।

আশুরা ও মুহাররম মাসের আমল

গতকাল 21/10/2017 ঈসায়ী বাংলার আকাশে চাদ দেখা গিয়েছে।আরবী নব বর্ষ ১৪৩৯হিজরী।
আরবী বর্ষের প্রথম মাস মুহাররম।
এর আভিধানিক অর্থ নিষিদ্ধ বা সম্মানিত। তখনকার সময়ের আরবরা কলহ বিবাদ,যুদ্ধ বিগ্ৰহ ও রক্তপাত এ মাসে নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু ইসলাম আগমনের পর নিষিদ্ধ অর্থ
রহিত করে দেয় জিহাদ করা আর নিষিদ্ধ থাকেনি। অবশ্য দ্বিতীয় অর্থ এখন ও বলবৎ আছে। তাই এ মাসে এবাদতের প্রতি বিশেষভাবে যত্নবান হওয়া উচিত।
কুরআন মাজিদে এ মাসকে আরও তিন মাসের সাথে উল্লেখ করে বলেন আর এর মধ্যে চারটি মাস সম্মানী(যথা যিলকদ,যিলহজ,মুহাররাম,রজব)বলার অপেক্ষা রাখে না এরমধ্যে মুহাররাম অন্যতম।
আল্লামা জাসসাস রহ. বয়ানুল কুরআনে উল্লেখ করেন যে এই চার মাসের বৈশিষ্ট হল ,যারা এই চার মাসে বিশেষভাবে ইবাদত করবে আল্লাহ তাআলা বাকি আট মাসে ইবাদত করার তাওফিক দান করবেন ।অনুরুপ ভাবে যে এ মাস সমূহে পাপ থেকে নিজেকে বাচিয়ে রাখবে  বাকি মাস সমূহে পাপ কার্য থেকে বাচা সহজ হবে।
এ মাসে ঐতিহাসিক  ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।
যেমন এ মাসের দশম তারিখে আশুরার দিনে হজরত আদম আ. এর তওবা কবুল হয়।
এই দিনে হজরত নূহ আলাহিস সালাম এর নৌকা মহাপ্লাবন থেকে মুক্তি পায়।এই দিনে হজরত ইউনুস আলাহিস সালাম মাছের পেট থেকে বের হন ও তার জাতীর তওবা কবুল হয়। এই দিনে হজরত ইউসুফ আলাহিস সালাম কে কূপ থেকে বের করা হয়।
মূসা আলাহিস সালাম এর অনুসারী বনী ইস্রাইল এই দিনে ফেরাউন থেকে মুক্তি পায় এবং ফেরাউন তার সভাসদ ও বিশাল সেনা বাহিনী সহ সমুদ্রে নিমজ্জিত হয়। এই দিনে হজরত সুলাইমান আলাহিস সালামকে বাদশাহী প্রদান করা হয়। এই দিনে হজরত হজরত ঈসা আলাহিস সালাম জম্ম গ্রহণ করেন ও এই তারিখে আবার আসমানে উঠিয়ে নেয়া হয়।
সর্বশেষ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লামের দৌহিত্র হুসাইন রাযিয়াল্লাহু আনহু শাহাদতের ঘটনা এ মাসেই সংঘটিত হয়।
এসব ঘটনা সম্পর্কে যদিও আপত্তি আছে তদুপরি এ কথা সত্য যে অনেক সহিহ হাদিসে এর বর্ণনা রয়েছে।

এ মাসে করণীয় কিছু আমল,
১.এ মাসে সাধ্যানুযায়ী বেশী বেশী রোজা রাখা।
২.বেশী বেশী তওবা ও ইস্তেগফার করা
৩.পরিবার পরিজনের প্রয়োজনে অন্যান্য দিনের তুলনায় সামর্থানুযায়ী অধিক ব্যয় করা।
৪.আশুরার দিন রোজা রাখা এবং ৯/১০ যে কোন একদিন আশুরার সাথে মিলানো।
আশুরার ফযিলত সম্পর্কে  অনেক হাদীস রয়েছে
১.আয়েশা রা. থেকে বর্ণীত রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার পূর্বে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লাম আশুরার রোজা রাখতেন। রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার পর হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লাম বললেন যার ইচ্ছা আশুরার রোজা রাখবে ।
عن ابي قتادة رضي اللَّه تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم صيام يوم عرفة احتسب على الله أن يكفر السنة التي قلبه والسنة التي بعده و صيام يوم عاشوراء احتسب على الله أن يكفر السنة التي قلبه
২-রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লাম এরশাদ করেন যে আমি আশাবাদি আশুরার রোজার অসিলায় আল্লাহ তাআলা অতীতের এক বছরের (ছগিরা)গোনাহ মাফ করে দিবেন(মুসলিম)
৩-হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লাম কখনো আশুরার রোজা ছাড়তেন না (নাসায়ী)
৪-হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লাম রমজান ও আশুরার দিনে যেভাবে রোজা রাখতে দেখা গেছে ,সে রকম অন্য সময় দেখা যায়নি(বুখারী)
৫-রমজানের পর যদি রোজা রাখতে চাও তাহলে মুহাররাম মাসে রোজা রাখো (ما ثبت بالسنة)
৬-আশুরার দিনে যে  ব্যক্তি পরিবার পরিজনের জন্য মুক্ত হাতে ব্যয় করবে আল্লাহ তাআলা তার সারা বছরের রোজগারে বরকত দিবেন।(رواه رزين والبيهقي)
তবে একটি কথা বিশেষভাবে মনে রাখা প্রয়োজন যে হজরত হুসাইন রাযিয়াল্লাহু আনহুএর শাহাদৎ বরণের কারণে আশুরার দিনের ফযিলত ও রোজার আদেশ আসেনি। বরং হজরত হুসাইন রাযিয়াল্লাহু আনহুর কারবালার ঘটনা ঘটার পূর্বে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লাম আশুরার ফযিলত ও রোজার ফযিলত বর্ণনা দিয়েছেন এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লামের ইন্তেকালের প্রায় পঞ্চাশ বছর পর তিনি শহীদ হন ,তাই হজরত হুসাইন রাযিয়াল্লাহু আনহু শাহাদতের কারণে আশুরায় ফযিলত এসেছে এ ধরণের কোন প্রমাণ ইসলামে নেই।হ্যা এতটুকু বলা যাবে যে হজরত হুসাইন রাযিয়াল্লাহু আনহুর শাহাদতের জন্য আল্লাহ তাআলা এই বরকতময় দিনকে পসন্দ করেছেন ,যে কারণে তার শাহাদতের ফযিলত আর ও বৃদ্ধি পেয়েছে ।
এ মাসে বর্জনীয় কাজ
.তাযিয়া 
কাউকে সান্তনা দেওয়া,আর পরিভাষায় তাযিয়া বলা হয়
আশুরার সময় মাযারের মত কবর নির্মাণ করা । ইহা অনেক ফাসেকী ও শিরিকের ফসল ।কার ও বিশ্বাস যে হজরত হুসাইন রাযিয়াল্লাহু আনহু স্বয়ং এতে সমাসীন আছেন।এ বিশ্বাসের বর্শবর্তী হয়ে অনেকে নযর নিয়াজ দিয়ে থাকে ।গায়রুল্লাহর নামে এসব হওয়ার কারণে এ ধরণের নযর নিয়াজ শেরেকের অন্তর্ভূক্ত,এ ধরণের দ্রব্যাদি খাওয়া ও হারাম।তাযিয়ার সামনে হাত জোর করে দাড়ানো ,তার দিকে পিঠ না ফেরানো,তাতে বিভিন্ন ধরণের প্রতিক ব্যনার টানানো , তাযিয়াকে যিয়ারত বলা  এছাড়া আর ও যত গর্হিত কাজ আছে এক প্রকার শিরিকের অন্তর্ভূক্ত ।
.ঢাক ঢোল ও বাজনা বাজানো
আশুরার আগে ও আশুরার দিন সমূহে ঢাক ঢোল আর বাদ্য যন্ত্রের আওয়াজে পরিবথশ কলুষিত হয়ে ওঠে।কাজটি একদিকে ইসলাম বিরোধী অপর দিকে তেমনি বিভেকের পরিপন্থি ।একটি শোক মিছিল বা একটি শোক দিবসকে কেন্দ্র করে ঢোল ও তবলার এই আওয়াজ আর জারী ও কাওয়ালীর সূর লহরী কেমন শোক দিবস পালন হয় তা আমাদের বোধগম্য নয়।
.আহাজারী করা
কিছু লোক এ দিন হায় হাসান,হায় হুসাইন বলে আহাজারী করতে থাকে,বুক চাপড়াতে থাকে ।এধরণের কাজ থেকে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। হজরত আবু সাইদ খুদরী রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণীত আছে যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লাম আহাজারকারী এবং শ্রবণকারীর উপর লানত করেছেন।
.শোকের পোষাক পরা
আশুরা উপলক্ষে বিশেষ রঙ্গের বা শোকের পোষাক পরিধান করা ও নিষিদ্ধ কাজ।একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লাম  একটি জানাযায় গিয়ে দেখেন লোক জন বিশেষ ধরণের পোষাক পরে শোক পালন করছে।রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লাম অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হয়ে বললেন তোমরা কি জাহেলী কাজ শুরু করেছ ?না জাহেলী প্রথার অনুসরণ করছো?
আমার মনে চাচ্ছিল তোমাদর জন্য এমন বদ দোয়া করি যে তোমাদের চেহারা যেন বিকৃত হয়ে যায় ।এ কথা বলার পর সবাই পোষাক খোলে তাওবা করল(ইবনে মাজাহ)
এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় নানা ধরণের কুপ্রথা প্রচলন থাকতে পারে ,ঈমান আমল হেফাজতের জন্য এ সব থেকে নিজে বাচা ও অপরকে বাচানো প্রয়োজন।

সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

হিজরী সন গোড়ার কথা

হিজরী সনের গোড়ার কথা।
::--- শামসুল আবেদীন
ইসলাম ধর্ম আগমনের পূর্বে মক্কাবাসী সময়ের হিসাব নিকাশ প্রসিদ্ধ কোন ঘটনার দিকে লক্ষ্য রেখে গণনা করতো।এ কারণে নানা ঘটনার প্রতি লক্ষ্য করে ভিন্ন ভিন্ন ক্যলেন্ডার প্রচলন ছিল। হস্তি বাহিনীর ঘটনার পর তার দিকে লক্ষ্য রেখে গণনা শুরু করে। এভাবেই চলতে থাকে।আবু মূসা আশআরী রা. ইরাকের গভর্নর থাকা অবস্থায় উমর ফারুক রাদিআল্লাহু আনহু এর কাছে আবেদন করেন যে নানান সময় আপনার চিঠি আসে, কিন্তু তারিখ না থাকায় আগে পরের চিঠি চেনা কঠিন হয়ে পড়ে ।
উমর ফারুক রাযিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু  সাহাবায়ে কেরামদের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করেন।
সবাই একমত পোষণ করেন যে স্বতন্ত্র তারিখ প্রবর্তন হওয়ার কিন্তু কোন ঘটনাকে কেন্দ্র করে গণনা শুরু হবে এ নিয়ে মতানৈক্য দেখা হয়। কেউ খেয়াল পেশ করলো যে হুজুর সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জম্ম তারিখ থেকে গণনা শুরু করা হউক।
কিন্তু এ মন্তব্য এ কারণে প্রত্যাখ্যান করা হলো যে খৃষ্টানরা ঈসা আলাইহি সালামের জম্ম তারিখ থেকে গণনা শুরু করেছে তাই তাদের অনুসরণ করে জম্ম থেকে শুরু করা যায় না এছাড়াও তা জম্মদিন পালন করতে উৎসাহিত করতে পারে এজন্য এ প্রস্তাব বাতিল করা হয়।
কেউ খেয়াল পেশ করলেন যে নবী সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মৃত্যু তারিখ থেকে গণনা শুরু করা হউক।এ প্রস্তাব ও এ কারণে প্রত্যাখ্যান করা হয় যে এতে আবার জাহিলিয়্যাতের  যুগের কুপ্রস্তাব শোক দিবস পালন করতে উৎসাহিত করতে পারে।
কেউ কেউ খেয়াল পেশ করলো যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট ওহি আসার সময় থেকে গণনা শুরু করা হউক। কিন্তু তাও কারণঃবশত প্রত্যাখ্যান করা হলো।
উমর ফারুক রাযিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন হিজরত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ।তাই হিজরত থেকেই আরবী তারিখ গণনা শুরু করা হউক।সবাই এ কথার উপর ঐক্যমত পোষণ করলেন।তাই আরবী সন হিজরী সন হিসাবে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। কিন্তু নবী করীম সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম রবিউল আউয়াল মাসে হিজরত করলে ও আরবী সনের প্রথম মাস রবিউল আউয়াল না হয়ে মুহাররম হল কারণ মুহাররাম মাসে প্রথম দলটি মদিনার দিকে হিজরত করেছিলেন ।

শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

বনী ইসরাইলের তিন ব্যক্তির ঘটনা ।

বোখারী শরীফে বর্ণিত আছে, হযরত
রসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন, বনী ইসরায়ীল
গোত্রে তিনজন লোক ছিল বিভিন্ন রোগে
আক্রান্ত। তন্মধ্যে একজন ছিল কুষ্ঠ
রোগাক্রান্ত, দ্বিতীয় জন মাথায় টাক
পড়া, তৃতীয় জন অন্ধ। আল্লাহ্ তা‘য়ালা এই
তিনজনকে পরীক্ষা করতে ইচ্ছা করলেন।
তিনি একজন ফেরেশতা পাঠালেন।
ফেরেশতা প্রথমে কুষ্ঠ রোগগ্রস্ত
লোকটির নিকট গিয়া বললেন, তুমি কী
চাও? লোকটি উত্তর করল: আমি আল্লাহ্র
কাছে এই চাই যে, আমার এই কুৎসিত
ব্যাধি নিরাময় হউক, আমার দেহের চর্ম
নূতন রূপ ধারণ করে সুন্দর হউক-যেন আমি
লোক সমাজে যেতে পারি, লোকে
আমাকে ঘৃণা না করে। আমি যেন এই
বালা হতে মুক্তি পাই। ফেরেশতা তার
শরীরে হাত বুলায়া দো‘আ করিলেন।
মুহূর্তের মধ্যে তার রোগ নিরাময় হয়ে
গেল। সর্বশরীর নূতন রূপ ধারণ করল। তারপর
আল্লাহর ফেরেশতা তাকে জিজ্ঞাসা
করলেন, তুমি কী পেতে চাও? লোকটি
বলিল, আমি উট পেলে সন্তুষ্ট হই।
ফেরেশতা তাকে একটি গর্ভবতী উট্নী
এনে দিলেন এবং আল্লাহর দরবারে
বরকতের জন্য দো‘আ করলেন।
অত:পর ফেরেশতা টাকপড়া লোকটির
নিকট গিয়া বললেন, তুমি কোন জিনিস
পছন্দ কর? লোকটি বলল, আমার মাথার
ব্যাধি নিরাময় হউক, যে কারণে লোক
আমাকে ঘৃণা করে। আল্লাহর ফেরেশতা
তার মাথায় হাত বুলাইয়া দিলেন। সঙ্গে
সঙ্গে মাথা ভাল হয়ে গেল। নূতন চুল
গজালো নূতন রূপ ধারণ করল। এখন
ফেরেশতা জিজ্ঞাসা করলেন, কোন
প্রকারের মাল তুমি পাইতে চাও? সে
বলিল, আল্লাহ্ যদি আমাকে একটি গরু দান
করেন, তবে আমি খুব সন্তুষ্ট হই। ফেরেশতা
একটি গর্ভবতী গাভী এনে দিলেন এবং
বরকতের জন্য দোয়া করলেন।
অনন্তর ফেরেশতা অন্ধ লোকটির নিকট
গমন করে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি
কী চাও? লোকটি বলল: আল্লাহ্ তা‘আলা
আমার চোখ দুটির দৃষ্টিশক্তি যেন
ফিরাইয়া দেন , যেন আমি আল্লাহর
দুনিয়া দেখতে পাই। ইহা আমার আরজু।
আল্লাহ্ তা‘আলার ফেরেশতা তাহার
চোখের উপর হাত বুলাইয়া দিলেন। সঙ্গে
সঙ্গে তাহার চোখ ভাল হয়ে গেল। সে
দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেল। অত:পর ফেরেশতা
জিজ্ঞাসা করলেন, আচ্ছা বল তো, কোন
বস্তু তুমি পছন্দ কর? অন্ধ বলল, আল্লাহ্ যদি
আমাকে একটি বকরী দান করেন, আমি খুব
খুশী হব। ফেরেশতা তৎক্ষণাৎ একটি
গাভীন বকরী আনিয়া তাহাকে দিলেন
এবং বরকতের দোআ করে চলে গেলেন।
অল্প দিনের মধ্যেই এই তিন জনের উট, গরু
এবং বকরীতে মাঠ পরিপূর্ণ হয়ে গেল।
তারা প্রত্যেকে এক একজন বিরাট ধনী।
অনতিকাল পরে সেই ফেরেশতা প্রথম
ছুরতে পুনরায় সেই উটওয়ালার (কুষ্ঠ
রোগীর) নিকট এসে বললেন, আমি
বিদেশে (ছফরে) আসিয়া বড়ই অভাবগ্রস্থ
হইয়া পড়িয়াছি। আমার বাহক জন্তুটিও
মারা গিয়েছে। আমার পথ-খরচও শেষ হয়ে
গিয়েছে। আপনি যদি মেহেরবানী করে
কিছু সাহায্য না করেন, তবে আমার
কষ্টের সীমা থাকবে না। এক আল্লাহ্
ছাড়া আমি সম্পূর্ণ নিরুপায়। যে আল্লাহ্
আপনাকে সুন্দর স্বাস্থ্য ও সুশ্রী চেহারা
দান করেছেন তার নামে আমি আপনার
নিকট একটি উট প্রার্থনা করতেছি।
আমাকে একটি উট দান করুন। আমি উহাতে
আরোহণ করে কোন প্রকারে বাড়ি যেতে
পারি। লোকটি বলল, হতভাগা কোথাকার!
এখান হতে দূর হও, আমার নিজেরই কত
প্রয়োজন রয়েছে? তোমাকে দিবার মত
কিছুই নাই। ফেরেশতা বললেন, আমি
তোমাকে চিনি বলে মনে হচ্ছে। তুমি কি
কুষ্ঠ রোগগ্রস্ত ছিলে না? লোকে কি এই
রোগের কারণে তোমাকে তুচ্ছ ও ঘৃণা করত
না? তুমি কি গরীব ও নিঃস্ব ছিলে না?
তৎপর আল্লাহ্ পাক কি তোমাকে এই ধন-
সম্পদ দান করেন নাই? লোকটি বলল, বাঃ
বাঃ! কি মজার কথা বলছো? আমরা বাপ-
দাদার কাল হতেই বড় লোক। এই সম্পত্তি
পুরুষানুক্রমে আমরা ভোগদখল করে
আসতেছি। ফেরেশতা বললেন, যদি তুমি
মিথ্যাবাদী হও, তবে আল্লাহ্ তাআলা
তোমাকে সেইরূপ করে দিন যেরূপ তুমি
পূর্বে ছিলে। কিছুকালের মধ্যে লোকটি
সর্বস্বান্ত হইয়া পূর্বাবস্থা প্রাপ্ত হল।
অনন্তর ফেরেশতা দ্বিতীয় ব্যক্তি
অর্থাৎ, টাকপড়া লোকটির নিকট গমন
করলেন। লোকটির এমন সুন্দর ও সুঠাম
চেহারা! মাথায় কুচকুচে কাল চুল, যেন
তাহার কোন রোগই ছিল না। ফেরেশতা
তার নিকট একটি গাভী চাইলেন। কিন্তু
সেও উটওয়ালার ন্যায়ই “না“ সূচক শব্দে
জবাব দিল। ফেরেশতাও তাকে বদদোয়া
দিয়া বললেন, যদি তুমি মিথ্যুক হও, তবে
আল্লাহ্ তায়ালা যেন তোমার সেই
পূর্বাবস্থা ফিরিয়ে দেন। ফেরেশতার
দোয়া ব্যর্থ হবার নয়। তার মাথার টাক
পড়া শুরু হইল, সমস্ত ধন-সম্পদ ধ্বংশ হল।
তারপর ফেরেশতা পূর্বাকৃতিতে সেই অন্ধ
ব্যক্তির নিকট গমন করে বললেন, বাবা
আমি মুসাফির! বড়ই বিপদগ্রস্ত হয়ে
পড়েছি। আমার টাকা-পয়সা কিছুই নাই।
আপনি সহানূভূতি ও সাহায্য না করলে
আমার কোন উপায় দেখিতেছি না। যে
আল্লাহ্ তায়ালা আপনাকে বিরাট
সম্পত্তির মালিক করেছেন, তার নামে
আমাকে একটি বকরী দান করুন-যেন কোন
প্রকার অভাব পূরণ করে বাড়ি যেতে
পারি। লোকটি বলল, নিশ্বয়ই। আমি অন্ধ,
দরিদ্র ও নিঃস্ব ছিলাম। আমি আমার
অতীতের কথা মোটেই ভুলি নাই। আল্লাহ্
তায়ালা শুধু নিজ রহমতে আমার
দৃষ্টিশক্তি ফিরাইয়া দিয়েছেন। এই সব
ধন-সম্পদ যা কিছু দেখতেছেন সবই আল্লাহ্
তায়ালার, আমার কিছুই নয়। তিনিই অনুগ্রহ
করে আমাকে দান করেছেন। আপনার যে
কয়টির প্রয়োজন আপনার ইচ্ছামত আপনি
নিয়ে যান। যদি ইচ্ছা হয় আমার পরিবার
পরিজন ও সন্তান-সন্তুতির জন্য কিছু
রাখিয়াতেও পারেন। আল্লাহর কছম,
আপনি সবগুলি লইয়া গেলেও আমি
বিন্দুমাত্র অস্তুষ্ট হইব না। কারণ, এসব
আল্লাহর দান।
ফেরেশতা বললেন, এসব তোমার থাকুক।
আমার কিছুর প্রয়োজন নাই, তোমাদের
তিন জনের পরীক্ষা করার উদ্দেশ্য ছিল;
তা হয়ে গিয়েছে, তারা দুইজন পরীক্ষায়
ফেল করেছে। তাদের প্রতি আল্লাহ্
তায়ালা অসন্তুষ্ট ও নারায হয়েছেন। তুমি
পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছ। আল্লাহ্ তোমার
প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন।
উপদেশ : হে মানুষ! চিন্তা কর! প্রথমোক্ত
দুইজন আল্লাহর নেয়ামতের শোকর করে
নাই বলে দুনিয়া ও আখেরাত উভয়ই তাদের
বিনষ্ট হয়েছে। তাদের অবস্থা কতই না
শোচনীয় হয়েছে! কারণ, আল্লাহ্ তাদের
উপর অসন্তুষ্ট হয়েছেন। তৃতীয় ব্যীক্ত
আল্লাহর শোকর করিয়াছে বলিয়া দুনিয়া
ও আখেরাত সবই বহাল রয়েছে, ধন-সম্পদ
কিছুই নষ্ট হয় নাই।
আল্লাহ্ তায়ালা ‘দিয়া ধন বুঝে মন,
কেড়ে নিতে কতক্ষণ।‘ সাধারণত: মানুষ বড়
হলে অতীতের কথা ভুলে যায়। এ ধরণের
লোককে প্রকৃত মানুষ বলা যায় না। প্রকৃত
মানুষ তারা-যারা অতীতের দুঃখ-কষ্টের
কথা স্মরণ করে আল্লাহর শোকর গোযারী
করে।