শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

শ্রদ্ধাঞ্জলি

জলাঞ্জলি ও শ্রদ্ধাঞ্জলি
হে পিতৃহীন ও মাতাহীন / কোন একজনকে
হারিয়ে শোকের সাগরে ভাসমান জীবন
পথে যুদ্ধরত সিপাহী তোমাকেই বলছি ।
জীবন পথে আবেগ নয় বাস্তবতার নিরিখে
চলা প্রয়োজন। জলাঞ্জলি শব্দটা ব্যবহার
হয় অপচয় , অপব্যয় ও সম্পুর্ণ বরবাদ অর্থে ।
এশব্দের বাহিরের অর্থ ও প্রয়োগ বেশ
সুন্দর ও ভালো , কিন্তু ভিতরের রুপটা
কোন মুসলমানের নিকট গ্রহণযোগ্য হতে
পারে না ।
এ শব্দের ভাবগত সাংস্কৃতিক ব্যাখ্যা
আপত্তিকর ।
জলাঞ্জলি হচ্ছে হিন্দুদের ধর্মীয়
অনুষ্টান । শব্দটি সংস্কৃত ভাষার বৈদিক
সংস্কৃতির একটি শব্দ। এর সন্ধি বিচ্ছেদ
করলে :জল +অঞ্জলি =জলাঞ্জলি অর্থ
আজলা পূর্ণ পানি।হিন্দুরা শবদাহের পর
প্রতাত্মার উদ্দেশ্যে আজলা পূর্ণ পানি
ছিটিয়ে দেয়।এই ধর্মীয় অনুষ্টানের নাম
'জলাঞ্জলি'বা বিসর্জন । হিন্দু ধর্মে
জলাঞ্জলির মত আর ও অনুষ্টান আছে।
যেমন ঘৃতাঞ্জলি (ঘৃত+অঞ্জলি),পু
ষ্পাঞ্জলি ,তিলাঞ্জলি ,কৃতাঞ্জলি,ও
শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রভৃতি অনুষ্টান । এসব
পারিভাষিক শব্দ হিন্দুদের পূজা মন্দির ও
দেবদেবীর পূজার ক্ষেত্রে প্রয়োগ হয় ।
পরিতাপের বিষয় হচ্ছে ,অনেক মুসলমান
এসব শব্দের ব্যবহারে ঈমান আকিদা গত
কোন বাধা আছে বলে মনে করে না ।
মৃতজনের লাশের পাশে বা কবরে বা
অথবা স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য
পুষ্পস্তবকের উপর কাগজে বা ব্যানারে
লেখে দেওয়া হয় শ্রদ্ধাঞ্জলি এর নিছে
ব্যানার বা পুষ্প অর্পনকারী ব্যক্তি
,সংগঠন বা সংস্থার নাম দেওয়া হয় । এই
রেওয়াজ ইসলাম সমর্তন করে না ।কারণ এর
দ্বার অন্য ধর্মের অনুসরণ ও অনুকরণ হয়।
এছাড়া অপব্যয় হওয়ার কারণে ও তা
নিষিদ্ধ।
কোরআন মাজিদে অপব্যয়ের ক্ষেত্রে
দুটি শব্দ ব্যবহার হয়েছে
1- ﺍِﺳْﺮﺍﻑ
-2 ﺗَﺒْﺰِﻳْﺮ
ইসরাফ বলা যেথায় একশত টাকা খরছ করা
প্রয়োজন সেখানে একশত টাকার চেয়ে
অধিক খরছ করা ,আর তাবযীর হল যেখানে
একশত টাকা ব্যয় করার দরকার নয়
সেখানে একশত টাকা ব্যয় করা ।আল্লাহ
পাক উভয়টা নিষেধ করেছেন।দেখা
যাচ্ছে তাবযীর ইসরাফের চেয়ে ও বড়
ধরণের গোনাহ।
কারণ মুসলিম হিসাবে আমাদের বিশ্বাস
মানুষ তার কর্ম অনুযায়ী জান্নাত বা
জাহান্নামে যাবে ।লোকটি যদি
জান্নাতি হয় ফুল দিয়ে তার সাথে মস্করা
করা ছাড়া আর কিছু নয় ,কারণ দুনিয়াবী
ফুলের চেয়ে অসংখ্য অগণিত সুঘ্রাণযুক্ত
ফুলের সুঘ্রাণ তারা নিচ্ছেন ।কোটি
টাকার লোককে যদি একশত টাকার একটি
জামা কিনে দেওয়া হলে যেমন এটা
তামাশা হয় এমনিভাবে জান্নাতি
লোকের উদ্দেশ্যে এ ধরণের কাজ
তাদেরকে ছোটকরণ ও তুচ্ছ তাচ্ছিলেরই
নামান্তর ।আর যদি লোকটি জাহান্নামী
হয় তাহলে এ ফুল দেওয়া বা ব্যানার
চাপানো সামান্যতম আযাব কম হবে না
বরং শাস্তি আরও বেড়ে যাবে ।
পুষ্পাঞ্জলি বা ব্যানার দ্বারা শুধু ফুল
বিক্রেতা , ফুলের বাগানের মালিকও
মুদ্রণকারীদের আর্থিক লাভ হয়। তাছাড়া
মৃত্যুবার্ষিকি বা জম্ম বার্ষিকি পালন
করা ইসলাম সমর্থন করে না ।তাই বলি
আবেগ নয় ইসলামের আলোকে আপনার
প্রিয় জনের নিকট সওয়াব পৌছানোর
ব্যবস্থা করুন ।
মৃত জনের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও মায়া
মমতা প্রদর্শনের সর্বোত্তম ব্যবস্থা
ইসলাম
ধর্মে আছে।সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করলে মৃত
জনের ও মঙ্গল হয় ।এমনিভাবে সমাজ
থেকে চলমান বেদআত মূলোৎপাটনে
অনেকটা সহায়ক হবে ।আর এ উদ্যোগ গ্রহণ
করার কারণে আপনি অতিরিক্ত সওয়াবের
অধিকারী হবেন । দোয়া করি
আল্লাহপাক যেন সব মুসলিমকে বিধর্মী
কালচার ছাড়ার ও নিজ সংস্কৃতি ধরার
তওফিক দান করেন।
ﺁﻣﻴﻦ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন