শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

খলিফা উমর ফারুক (র.)

"আমাদের দেশে সেই লোক হবে কবে
কথায় না ভাল হয়ে কাজে ভাল হবে''
#উমর ফারুক #রাযিয়াল্লাহু #আনহু
তার পিতার নাম খাত্তাব ও মায়ের নাম
হানতামাহ।
তিনি মক্কা নগরীতে 582/83 খৃষ্টাব্দে
জম্ম গ্রহণ করেন ।তিনি মক্কা নগরীর
একজন উচ্চ শিক্ষিত,সুবক্তা,কবি ,সাহসী
যুদ্ধা,ও কুস্তিগীর ছিলেন।
ইসলাম গ্রহণের পূর্বে ইসলামের ঘুরতর
দুশমন ছিলেন।
নিজ বোন ফাতিমার তিলাওয়াত শুনে
রাসুলুল্লাহ (দঃ)এর কাছে গিয়ে ইসলাম
গ্রহণ করেন।
তার উদ্যোগেই ইসলামের দাওয়াত
প্রকাশ্যে শুরু হয় ।সর্ব প্রথম কাবা ঘরে
জামাতের সাথে নামাজ আদায় করা হয় ও
তার প্রস্তাবেই আযানের ব্যবস্থা চালু
হয়। রাসূল দ. এর সাথে সব যুদ্ধেই অংশ
গ্রহণ করেন।
উমর যেমন ছিল কঠোর তেমনি ছিলেন
কোমল।তিনি খলিফা হওয়ার পর লোকজন
ঘর থেকে ভয়ে বের হতো না,এ খবর শুনার
পর তিনি ঘোষণা দিলেন রাসূল দ. ও আবু
বকর নম্র নীতি বলতেন তাই আমি কঠোরটা
বলতাম যাতে কঠোর ও নিম্ন নীতি মিলে
মধ্যম পন্থার নীতি হয়,আজ যেহেতু উনারা
নেই
তাই আমি আজ থেকে কোমল উমর ।
দেশের মানুষের অবস্থা জানার জন্য
পোষাক পরিচ্ছেদ পরিবর্তন করে একাকি
ঘুরে বেড়াতেন।একবার শুনলেন এক বাচ্ছা
কাদছে অথচ তার মা বাচ্ছাকে দুধ পান
করাচ্ছে ,অপর একজন বাচ্ছার মাকে
জিজ্ঞেস করলো বাচ্ছাকে কেন দুধ পান
করাচ্ছো না ?
সে মহিলা জবাব দিল খলিফা উমর
দুগ্ধপৌষ্য শিশুর কোন ভাতা দেন না ,তাই
এমন করছি যাতে বাচ্ছা দুধ ছাড়ার
অভ্যস্থ হয়ে যায়।খলিফা উমর ইহা শুনে
কেদে কেদে মদিনায় ফিরে আসলেন আর
বলতে লাগলেন না জানি কত শিশু এ
ভাবে কষ্ট করছে ?পরদিন ঘোষণা দিলেন
প্রত্যাকের জন্য ভাতা দেওয়া হবে চাই
সে দুধ ছাড়ুক বা না ছাড়ুক , ছোট হউক বা
বড়।
তিনি মুমিনদের প্রতি রহমশীল
,কাফেরদের বেলায় কঠোর।
হযরত উমর রা. সর্ব প্রথম পুলিশ ওসামরিক
বাহিনী গঠন ,আদম শুমারী,রাজস্ব ব্যবস্থা
কায়েম, অসহায় ও অক্ষমদের ভাতা প্রদান
,জিযিয়া ও খেরাজ ব্যবস্থা
প্রবর্তন,হিজরী সন গণনা,কৃষিক্ষেত্রে
সেচ ব্যবস্থা চালু করেন। শাষন বিচার
ব্যবস্থা নিরপেক্ষও নিখুত ছিল ।
আইনের চোখে উচু-নিচু,ধনী-গরীব,আপন-পর
কোন ভেদাভেদ ছিল না।নিজ ছেলে আবু
শাহমাকে কঠোর শাস্তি দিতে কুন্ঠাবোধ
করেননি।
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কাজে সাহাবিদের
সাথে পরামর্শ করতেন।
সাম্যের বিরল প্রতিক ছিলেন। একবার
সিরিয়া সফরকালে নিজের গোলামের
সাথে যে সাম্যের দৃষ্টান্ত স্থাপন
করেছেন তা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
প্রায় অর্ধ পৃথিবীর ক্ষমতাধর হওয়া
সত্বেও তার মাঝে ছিল না সামান্তম
অহংকার।সাদা-সিধা জীবন যাপন
করতেন।গাছের ছায়ায় মাটির বিছানায়
কেটেছে তার জীবন।
তিনি 10বছর 2 মাস শাষনকার্য পরিচালনা
করেন।তিনি 645খৃষ্টাব্দে শাহাদত বরণ
করেন । ﺍﻧﺎ ﻟﻠﻪ ﻭﺍﻧﺎ ﺍﻟﻴﻪ ﺭﺍﺟﻌﻮﻥ
ইন্তিকালের সময় তার বয়স হয়েছিল 63
বছর ।
প্রায় আলেমরা সালাফে
সালেহীনদেরকে নিয়ে গর্ব করে বলেন
বা ব্যানারে লেখা থাকে
ﺍﻟﻯٔﻚ ﺍﺑﺎﻯٔﻲ ﻓﺠﺌﻨﻲ ﺑﻤﺜﻠﻬﻢ ....
তাই আমাদের পূর্বসূরী ও জান্নাতের
সুসংবাদ প্রাপ্ত একজন সাহাবীর
জীবনের কিছু অংশ লেখলাম ,কারণ দাবী
আর আমাদের আমলে রাত দিন তফাৎ
আছে। শুধু দাবী এবং কথায় ভাল হইলেই হয়
না বাস্তবে কাজে ভাল থাকতে হয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন